বাংলাদেশে চলমান হট টপিক রাসেল'স ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। তবে রাসেল ভাইপার'স সাপটি নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি, উদ্বেগ ও আতঙ্ক এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব, সংবাদ মাধ্যমে অতিরঞ্জিত ও খণ্ডিত সংবাদের ফলে বিষয়টি এখন টক দ্যা কান্ট্রি। উদ্ভূত পরিস্থিতি এমন জায়গায় চলে গেছে সাপটি মারার প্রচারণাও চালানো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমন অবস্থায় ফরিদপুরের একজন রাজনীতিবিদ প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে রাসেল'স ভাইপার সাপ মারতে পারলে প্রতিটির জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
অবশ্য বনবিভাগ একে বেআইনি ও শাস্তিমূলক অপরাধ বলে জানিয়েছে। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
সাপটি দেখতে অনেকটা অজগরের বাচ্চার মত হলেও ত্রিকোণাকার মুখ ও হালকা বাদামি রঙের দেহে উপবৃত্তাকার কালো রঙের ছোপ রয়েছে। দেহ মোটাসোটা, লেজ ছোট ও সরু।
প্রাপ্তবয়স্ক সাপের দেহের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ১.৮ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এর মাথা চ্যাপ্টা, ত্রিভুজাকার এবং ঘাড় থেকে আলাদা। থুতনি ভোঁতা, গোলাকার এবং উত্থিত।
গবেষকরা বলছেন, রাসেল’স ভাইপার ভালো সাঁতার কাটে এবং এই সাপ এক সাথে ৩-৬৩টি পর্যন্ত বাচ্চা দিয়ে থাকে।এসব বাচ্চা দুই বছরে পরিপক্ব হয়। এদের গর্ভধারণকাল ছয় মাস। এই সাপটি সাধারণত নিশাচর এবং মানুষের জনবহুল এলাকায় সাধারণত এরা থাকে না। থাকার জন্য ঝোপ ঝাড়, ফসলের গোলা কিংবা জমির বড় গর্ত এদের পছন্দ।
ইদানিং এর উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার কারণে এটা নিয়ে এত মাতামাতি হচ্ছে।উপমহাদেশের পরিচিত সাপ হলেও গত এক দশক আগেও মনে করা হতো সাপটি এ দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিশেষত, বরেন্দ্র অঞ্চলে এর আধিক্য থাকলেও বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলসহ ২৮টি জেলায় এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। গত এক বছর ধরে সাপটির অস্তিত্ব বিভিন্নভাবে জানান দিচ্ছে। আগে বন, জঙ্গল, ঝোপে সাপটির অস্তিত্ব অত্যাধিক হলেও বাসস্থান বিলোপের কারণে ইদানিং ধানক্ষেতে অনেক কৃষক সাপটির কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছেন।


