পদ্মা নদীর তীরে পালেরচর বাজারে মাছের জমজমাট কেনাবেচা

0


 

শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার পালেরচর বাজার এখন পদ্মা নদীর তীরে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে বিশাল পরিমাণে টাটকা মাছের কেনাবেচা চলে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, প্রতিদিন প্রায় দেড় কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয় এই বাজারে। এখানকার মাছের সরবরাহে ইলিশ, বোয়াল, চিংড়ি, কাতলা, বাইমসহ নানা জাতের মাছ অন্তর্ভুক্ত, যা ক্রেতাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো করে তোলে।


১৯৭৫ সালে কয়েকটি ছাপরা ঘর ও ছোট দোকান নিয়ে শুরু হওয়া এই বাজারটি বর্তমানে শরীয়তপুর জেলার অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ বাজারের বিকাশে পদ্মা সেতুর ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেতু চালু হওয়ার পর থেকে ঢাকা, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা সহজেই এখানে পৌঁছাতে পারছেন। যোগাযোগের এই বিপ্লব বাজারের পরিসর ও বিক্রি—উভয়ই বাড়িয়েছে কয়েকগুণ।


বর্তমানে বাজারে রয়েছে ৪টি আড়ত ও ৩৫টি খুচরা দোকান, যেখানে শত শত জেলে প্রতিদিন মাছ নিয়ে আসেন। শরীয়তপুর জেলার তিনটি বড় নদী—পদ্মা, মেঘনা ও কীর্তিনাশা—এবং অসংখ্য খাল থেকে প্রতিদিন ২৫–৩০ মেট্রিক টন মাছ ধরা হয়, যার বড় অংশ পালেরচর বাজারে বিক্রি হয়। জেলে সাহাদাৎ হোসেন জানান, প্রতিদিন ভোরে নদীতে গিয়ে দুপুর নাগাদ মাছ ধরে বাজারে নিয়ে আসেন। মৌসুম ভালো থাকলে তাঁর আয় হয় ১২-১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।


জেলা মৎস্য কর্মকর্তার মতে, বাজারে ক্রেতার চাপ থাকায় জেলেরা ভালো দাম পাচ্ছেন, আর পদ্মা সেতুর কারণে ব্যবসা এখন আরও গতিশীল হয়েছে। এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতিতে এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। বাজারটি স্থানীয় মানুষের জীবিকা নির্বাহের একটি প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে এবং এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা উজ্জ্বল। পদ্মা সেতু ও এই বাজারের সমন্বয়ে শরীয়তপুর জেলার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top