২০ বছর পরে শরীয়তপুরের জোড়া খুনের রায় ঘোষণা,রায় প্রত্যাখ্যান করে সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ

0


 

দীর্ঘ ২০ বছর পর শরীয়তপুরের বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর পিপি অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান ও তার ভাই মনির হোসেন মুন্সি হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালত।রায়ে ৬ আসামির ফাঁসি, ৪ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৩ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি ৪০ আসামিকে খালাস প্রদান করা হয়। ২১ মার্চ রোববার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ শওকত হোসেন এ রায় প্রদান করেন।


দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন :

ফাঁসি : শহীদ কোতোয়াল (৫০), শাহিন কোতোয়ালি (৪৬),শফিক কোতোয়াল (৪০), মজিবর তালুকদার (৫২), শহীদ তালুকদার (৪০) ও সোলেমান সরদার (৪৮)।

যাবজ্জীবন : 

বাবুল তালুকদার (৫৫), বাবুল খান (৫৬), ডাবলু তালুকদার (৪৯) ও রশিদ (৪২)।

দুই বছরের :

মন্টু তালুকদার (৪৫), মজনু তালুকদার (৪৯) ও আসলাম সর্দার (৫২)।


এদিকে রায়কে ঘিরে যেকোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদালত প্রাঙ্গণে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়।


৪০ আসামি খালাস ও স্বীকৃত দাগি আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হওয়ায় সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান মুন্সী ও মনির হোসেন মনির সর্মথকরা শরীয়তপুর শহরের প্রধান সড়ক ও বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে শরীয়তপুর সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।


সাবেক পিপি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান মুন্সির বড় ছেলে শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র ও জেলা জজ আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট পারভেজ রহমান বলেন, আমার বাবা ও চাচা হত্যার সাথে সরাসরি যারা জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে আমরা আদালতে প্রমাণ করতে পেরেছি। আমরা আশা করেছিলাম তাদের ফাঁসির রায় হবে। কিন্তু তাদের অনেককে সাজা কমিয়ে দেয়া হয়েছে এবং অনেককে খালাস দেওয়া হয়েছে। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।


উল্লেখ্য, ২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-১ (পালং- জাজিরা)আসনে প্রার্থী ছিলেন মোবারক আলী সিকদার আওয়ামী লীগ এবং হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গ স্বতন্ত্র। পহেলা অক্টোবর এর নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতার কারণে কয়েকটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন নির্বাচন কমিশন। পরবর্তীতে ৮ অক্টোবর ঐসব কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়।৫ অক্টোবর নৌকার পক্ষে শহরে নিজ বাড়িতে নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা করেছিলেন অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান। বিদ্রোহী প্রার্থী সমর্থক আওয়ামী লীগের একটি বিদ্রোহী গ্রুপ অতর্কিত গুলি বর্ষণ শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলে নিহত হন অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান ও তার ভাই মনির হোসেন মুন্সী। 


এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমানের স্ত্রী জিন্নাত হাবিব বাদী হয়ে সাবেক এমপি হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গসহ ৫৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার রায় ঘোষণা হলো দীর্ঘ ২০ বছর পরে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top