শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষায় নির্মিত তীররক্ষা বাঁধের ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে একশ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। গত দেড় মাসে শতাধিক বসতবাড়ি ও স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়েছে। শুধুমাত্র ৬ আগস্টেই ১৭টি ঘরবাড়ি নদীতে ভেসে গেছে।
জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের জিরোপয়েন্ট এলাকার আলম খাঁর কান্দি জামে মসজিদের দ্বিতল ভবনও নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় মানুষ দিশেহারা হয়ে তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। বর্তমানে মাঝিরঘাট বাজার ও পদ্মাপাড়ের প্রায় ১ হাজার পরিবার চরম আতঙ্কে রয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে পদ্মা সেতু প্রকল্পের রক্ষাবাঁধে ভাঙন শুরু হয়। চলতি বছরের ৭ জুন, ৭ জুলাই, ৯ জুলাই, ২৩ জুলাই, ৩১ জুলাই ও ৬ আগস্ট পর্যন্ত ছয় দফা ভাঙনে ৬৭০ মিটার রক্ষাবাঁধ পদ্মায় বিলীন হয়েছে। এতে আলম খাঁর কান্দি, ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সিকান্দি ও মাঝিরঘাটের ৩০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ৫০টি ঘরবাড়ি হারিয়ে গেছে।
বর্তমানে মাঝিরঘাট বাজারের ২০০টির বেশি দোকান এবং ৬০০ পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করছেন যে শীঘ্রই কোনো স্থায়ী সমাধান আসবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তারেক হাসান বলেন, “পদ্মার প্রবল স্রোতের কারণে ভাঙন ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আপদকালীন ব্যবস্থা হিসেবে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রকল্প পাঠানো হয়েছে।” তিনি আরও বলেন যে, স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকার ও বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এই ভাঙন স্থানীয় অর্থনীতি ও জীবিকার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। স্থানীয় বাজার ও ব্যবসায়ীদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এই ভাঙনের ফলে আরও বড় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।