গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে রবিবার শরীয়তপুরে একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। সকাল ১০টার দিকে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ পেশাদার সাংবাদিক ফোরাম (বিপিজেএফ) শরীয়তপুর জেলা শাখার উদ্যোগে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে শরীয়তপুরের সাংবাদিক সমাজের প্রায় অর্ধশতাধিক সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা বলেন, 'সাংবাদিকরা সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে না।' সাংবাদিকরা আরও বলেন, 'আমরা তুহিন হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। সাংবাদিকেরা যেন তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে নিরাপদ বোধ করেন, তার জন্য প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।'
এই মানববন্ধনে অংশ নেন দৈনিক হুংকার সম্পাদক আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান হাবীব, দৈনিক রুদ্রবার্তা সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাইলট, দৈনিক সংগ্রামের প্রতিনিধি কেএম মকবুল হোসেন, মানবজমিনের শেখ খলিলুর রহমানসহ আরও অনেক সাংবাদিক।
কর্মসূচির শুরুতে সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন, যাতে তারা সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি জানান। স্মারকলিপিতে তারা বলেন, 'সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং অপরাধীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।'
গাজীপুরের এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। সাংবাদিক সমাজের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার যে অনুভূতি রয়েছে, তা নিরসনে প্রশাসনের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন। সাংবাদিক সমাজ আশা করছে, সরকার ও প্রশাসন এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করবে।
বাংলাদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হুমকি ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে, যা সাংবাদিকতার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এই প্রেক্ষাপটে গাজীপুরের ঘটনাটি সাংবাদিক সমাজের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। এটি শুধু সাংবাদিকদের জন্য নয়, বরং সারা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যও অত্যন্ত জরুরি। সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।